Skip to main content

কিভাবে শেয়ার মার্কেটে/বাজারে ব্যবসা শুরু করব: A to Z গাইড

কিভাবে শেয়ার মার্কেটে /বাজারে ব্যবসা শুরু করব - সম্পূর্ণ গাইড আপনি এখানে পেয়ে যাবেন।

    বর্তমানে সময়ে শেয়ার মার্কেট বা স্টক মার্কেট ( Stock Market) ইনভেস্টিং, ট্রেডিং (Trading),  মিউচুয়াল ফান্ড (Mutual Fund) এই সমস্ত শব্দগুলি আস্তে আস্তে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। শেয়ার মার্কেটেও যে টাকা ইনভেস্ট করে সেটিকে আরো বড় ক্যাপিটাল তৈরি করা যায় মানুষ ধীরে ধীরে সেটি বুঝতে পারছে। এই নিবন্ধে আমরা দেখব কিভাবে শেয়ার মার্কেটে বা বাজারে ব্যবসা শুরু করতে হয় এবং এর প্রাথমিক পদক্ষেপ গুলি কি হতে পারে। 

    কিভাবে শেয়ার মার্কেটে /বাজারে ব্যবসা শুরু করব

    Telegram Channel  Join Now

    কিভাবে শেয়ার মার্কেট /বাজারে বিনিয়োগ শুরু করব ( How To Invest In Share Market ) 

    বিগত কয়েক বছরে অনেক মানুষ শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক প্রকাশ করছে এবং   প্রচুর মানুষ এই শেয়ার মার্কেটে টাকা ইনভেস্ট করেছেন। কিন্তু সব সময় মনে রাখবেন শেয়ার মার্কেট হলো একটি ঝুঁকিপূর্ণ লাভজনক ব্যবসা। তাই নতুনদের জন্য এখানে কিছু গাইড দেওয়া হল যে কিভাবে শেয়ার বাজারে আপনি বিনিয়োগ শুরু করবেন - 

    ১. শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে শিখুন: শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করার আগে আপনার শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে সমস্ত ডিটেলস জানা উচিত। এটি আপনি বই পড়েও শিখতে পারেন অথবা ইউটিউব চ্যানেল থেকেও আপনি শিখতে পারেন নিচের বিষয় গুলি - 

    • শেয়ার মার্কেট কিভাবে কাজ করে সেটি জানতে হবে
    • শেয়ার মার্কেটে বিভিন্ন নিয়ম কানুন আছে সেগুলি জানতে হবে
    • লাইভ মার্কেট অবজারভেশন করা।
    • বিভিন্ন কোম্পানি ও তার সেক্টর সম্পর্কে জানা।
    • ক্যাপিটাল কমপাউন্ডিং।
    • বিভিন্ন টেকনিক্যাল ভাষা ( সাপোর্ট, রেজিস্ট্যান্স,  Candle , EMA )

    এই আর্টিকেল টি পড়তে পারেন: ক্লিক করুন-শেয়ার মার্কেট কি?


    ২. ব্রোকারেজ অ্যাকাউন্ট খুলুন :  এরপর একটি ব্রোকার একাউন্ট ( Demat Account) খুলতে হবে। বর্তমানে ফ্রিতে আপনি ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। জনপ্রিয় কিছু প্রকার ব্রোকার - Groww, Angle One, UP Stocks, Zerodha ( Paid)


    ৩. শেয়ার কেনার জন্যে টাকা জমা করুন: এবার আপনার ডিমাট একাউন্টে টাকা জমা করুন।  এখানে মনে রাখবেন আপনার জরুরী টাকা কখনো শেয়ার মার্কেটে ইনভেস্ট করবেন না আপনি শেয়ার মার্কেটে সেই টাকায় ইনভেস্ট করুন যেটি আগামী ৩ বছর আপনার কোন কাজে লাগবে না। অথবা আপনার কাছে যদি  টাকা না থাকে তাহলে আপনি মাসে মাসে অল্প অল্প করে ইনভেস্ট করতে পারেন। 

    ৪. শেয়ার কেনার সিদ্ধান্ত নিন :  এবার আপনি যে কোম্পানির শেয়ার কিনতে চান তার ফান্ডামেন্টাল অ্যানালিসিস করুন -  

    • কোম্পানি যে সেক্টর থেকে ব্যবসা করছে সেই সেক্টরে আগামী দিনে গ্রোথ আসবে কিনা। কোম্পানি ফেয়ার ভ্যালু বা আন্ডার ভ্যালু আছে কিনা ( PE Ratio & Book Value)
    • কোম্পানির Profit & Loss দেখুন।
    • কোম্পানির Sales Gtoth দেখুন।
    • কোম্পানির ক্যাশ ফ্লো ( Cash Flow) পজেটিভ আছে কিনা দেখুন
    • ROCE & ROE কমপক্ষে ১৫% হলে ভালো হয়। ( ব্যাংকিং সেক্টর এর ক্ষেত্রে ROCE না দেখলেও চলবে)
    • কোম্পানি তে FII/DII বড় বড় Investor রা তাদের স্টেক বাড়িয়েছে কিনা অথবা একই রেখেছে কিনা দেখুন।

    ৫. সঠিক এন্ট্রি : ধরে নিলাম আপনি সঠিক ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস করে একটি কোম্পানিকে সিলেক্ট করলেন। এবার দেখতে হবে সঠিক এন্ট্রি। ভালো কোম্পানিতেও যদি আপনি বেশি দামে এন্ট্রি নিয়ে ফেলেন তাহলে কিন্তু আপনি বড় প্রফিট করতে পারবেন না। সব সময় মনে রাখবেন, ১০ টাকার কোম্পানিকে যদি আপনি ৭-৮ টাকায় কিনতে পারেন তাহলেই কিন্তু বড় প্রফিট তৈরি করতে পারবেন। 

    এন্ট্রি নেওয়ার জন্য আপনি EMA ব্যবহার করতে পারেন। শর্ট বা long time investing এর জন্য উইকলি ক্যান্ডেল ( Weekly Candle) এ 200 EMA এর কাছাকাছি সব থেকে এন্ট্রি নেওয়ার জন্যে ভালো। কারন EMA সাপোর্ট হিসেবে কাজ করে।

     


    বোনাস টিপস: যদি স্টক 200 ema এর কাছে না পান, তাহলে 50 ema এর কাছে অল্প টাকা ইনভেস্ট করলেন, পরে যদি শেয়ার 100 EMA এর কাছে আসে, তাহলে আবার কিছু টাকা ইনভেস্ট ইনভেস্ট করলেন, এবং শেষে যদি 200 ema এর কাছে পান, তাহলে আবার ইনভেস্ট করলেন। এভাবে আপনার এভারেজ Buying Price কমে আসবে। 


    ৬. শেয়ার বিক্রি : শেয়ার বিক্রির জন্য আপনি একটি টার্গেট ঠিক করতে পারেন। আপনার এনালাইসিস করা কোম্পানির ফান্ডামেন্টাল হিসেবে আপনি সেখান থেকে কত পারসেন্ট প্রফিট নিতে চান সেটি ঠিক করুন এবং সেই প্রফেট পার্সেন্টেজে আপনি আপনার শেয়ারকে বিক্রি করতে পারেন। মনে রাখবেন অনেক শেয়ারের দাম ডাউনেও চলে যেতে পারে যদি কোম্পানি ফান্ডামেন্টাল ভালো হয় আপনি যদি সেই কোম্পানি সম্পর্কে ভালো করে বুঝে থাকেন তাহলে কখনোই লসে এই কোম্পানিটিকে সেল করে দেবেন না। 

    এই আর্টিকেল টি পড়ুন : ক্লিক করুন-শেয়ার কখন বিক্রি করা উচিত ? 


    ৭. বিনিয়োগের ঝুঁকি কমানো বা রিস্ক ম্যানেজমেন্ট : শেয়ার মার্কেটে একটি ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ। তাই আপনি যদি একদম নতুন হন বা আপনার যদি অভিজ্ঞতা কম হয় তাহলে আপনার সমস্ত টাকা কোন একটি কোম্পানিতে ইনভেস্ট করে দেওয়া উচিত হবে না। যত ভালই Large cap কোম্পানি হোক না কেন আপনি আপনার মোট ক্যাপিটালের ৫% ( যদি খুব ভালো কোম্পানি হয়, তাহলে ১০% অবধি ইনভেস্ট করতে পারেন Large cap কোম্পানি গুলোতে) এর বেশি কোনো স্টক এ ইনভেস্ট করবেন না। Midcap ও Small cap কোম্পানি হলে ৩% এর বেশি ইনভেস্ট করবেন না । আপনি যদি এভাবে প্লান করে ইনভেস্ট করতে পারেন তাহলে আপনার পোর্টফোলিও Diversify হবে এবং যদি মার্কেট ডাউনও হয় তাহলে আপনার পোর্টফোলিও খুব একটা নিচে যাবে না। 

    বোনাস টিপস : আপনার পোর্টফোলিওতে , বিভিন্ন গ্রোথ সেক্টর এর  Large cap, Midcap, Small Cap, স্টক রাখুন। 


    শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা  

    ১. শেয়ার মার্কেট একটি ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগের জায়গা। তাই কখনো আপনার সঞ্চিত সমস্ত টাকা এই শেয়ার মার্কেটে ইনভেস্ট (Invest) করবেন না এবং আরো একটি অনুরোধ করব কখনো কোনদিন লোন নিয়ে সেই টাকা শেয়ার মার্কেটে ইনভেস্ট করবেন না।

    ২. শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করার আগে শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে সমস্ত কিছু সব ধরনের জ্ঞান অর্জন করুন। 

    ৩. কখনোই অপশন ট্রেডিং  বা ইনট্রাডে ট্রেডিং ( Intraday) এর দিকে ঝুঁকবেন না। মনে রাখবেন অপশন ট্রেডিং খুবই রিস্কি। ৯৯% মানুষ এই অপশন ট্রেডিং এ তাদের টাকা লস করে। ( ১-২ বছরের অভিজ্ঞতা হওয়ার পর আপনি টেকনিক্যাল এনালাইসিস ভালো করে শিখে, শুধুমাত্র সুইং ট্রেডিং ( Swing Trading) করতে পারেন)

    ৪. অন্যের  সাজেশানে বা অন্যের বলা  কোম্পানির শেয়ারে কখনো ইনভেস্ট করবেন না, যতক্ষণ না আপনি নিজে সেই কোম্পানিটি সম্পর্কে সঠিক ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস ( Fundamental Analysis) করতে পারছেন এবং তার বিজনেস বুঝতে পারছেন এবং আপনি নিজে একটি কনফিডেন্স পারছেন সেখানে টাকা ইনভেস্ট করতে। 

    ৫. কখনো পেনি স্টকে ( যে সব কোম্পানির শেয়ার এর দাম ১ টাকা থেকে ১০-১২ টাকা) ইনভেস্ট করবেন না। 

    ৬. টিভি, নিউজ চ্যানেল ( যে চ্যানেল গুলি তে শেয়ার মার্কেট নিয়ে আলোচনা হয়) থেকে দূরে থাকবেন। 

    ৭. মার্কেটে যদি হঠাৎ ক্রাশ বা বড় ডাউন ফল হয় তাহলে ভয় পাবেন না।

    ৮. আপনাকে ধৈর্য ধরা শিখতে হবে। যদি আপনি খুব তাড়াতাড়ি টাকা ইনকাম করতে চান শেয়ার মার্কেট থেকে, তাহলে শেয়ার মার্কেট আপনার জন্য নয়

    আশা করি নিবন্ধটি আপনাকে শেয়ার মার্কেটে ব্যবসা শুরু করতে সহায়তা করবে।


    শেয়ার মার্কেট সংক্রান্ত তথ্য বাংলায় পেতে এই টেলিগ্রাম চ্যানেলে যুক্ত হন - ক্লিক করুন


    Comments

    Popular posts from this blog

    শেয়ার মার্কেটে ট্রেডিং কি ,কত প্রকার, ট্রেডিং এর সুবিধা ও অসুবিধা | What Is Trading In Bengali

    শেয়ার মার্কেটে ট্রেডিং কি , কতপ্রকার ট্রেডিং ( Trading ) হয় এবং ট্রেডিং সুবিধা ও অসুবিধা এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে, নিচের এই নিবন্ধ টি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।  Table Of Contents বর্তমান সময়ে, তরুণ প্রজন্ম এর কাছে ট্রেডিং ( Trading ) শব্দ টি খুবই জনপ্রিয় হয়েছে। প্রত্যেকেই শেয়ার মার্কেট ( Share Market ) থেকে ট্রেডিং করে ইনকাম করতে চাইছে। চারিদিক এ ট্রেডিং এর কোর্স ( Trading Online Course) বিক্রি হচ্ছে। তাই , আজ আপনাদের  কাছে ট্রেডিং কি , এবং কতপ্রকার ট্রেডিং শেয়ার মার্কেট এ করা যায়, সেসব সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয় তুলে ধরবো।  শেয়ার মার্কেটে ট্রেডিং কি ? [ What Is Trading in Bengali ] শেয়ার মার্কেটে অল্প সময়ের জন্য কোনো কোম্পানির শেয়ার কেনা - বেচা ( Buy - Sell) কে ট্রেডিং বলা হয়। আপনি আজই কোনো কোম্পানির শেয়ার কিনে আজকেই বিক্রি অথবা, ২ দিন পর বা ১ মাস পর বিক্রি করতে পারেন, এটিকেই সহজ ভাষায় ট্রেডিং হবে। ট্রেডিং মূলত টেকনিক্যাল এনালাইসিস ( Technical Analysis) নির্ভর। শেয়ার মার্কেটে ট্রেডিংয়ের জন্য কোম্পানির ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এর উপরে বেশি গুরু

    শেয়ার মার্কেট কি? কিভাবে শুরু করবো ?

    আপনি কি শেয়ার মার্কেট কি  (   what is share market in bengali  )   সম্পর্কে জানতে চাইছেন ?  কিভাবে শুরু করবেন ভাবছেন?  Table Of Contents চিন্তা করবেন না, এই আর্টিকেল এ শেয়ার মার্কেট বা স্টক মার্কেট সম্পর্কে সব কিছু তথ্য দেওয়া হলো। সমস্ত নতুন বিনিয়োগ কারি দের এই পোস্ট  শেয়ার মার্কেট / শেয়ার বাজার সম্পর্কে জানতে সাহায্য করবে।  শেয়ার মার্কেট বা, শেয়ার বাজার কি ? ( Share market details in bengali) শেয়ার মার্কেট হল, এমন একটি জায়গা যেখানে বিভিন্ন কোম্পানি লিস্টেড থাকে এবং আপনি সেগুলোর মধ্যে কোনো কোম্পানির শেয়ার বা অংশ কিনতে পারবেন এবং সেটি বিক্রি ও করতে পারবেন। মনে রাখবেন, আমাদের ভারতীয় শেয়ার মার্কেট সরকারি সংস্থা সেবি ( SEBI) নিয়ন্ত্রন করে।  কোম্পানি গুলি আরও ২ টি সংস্থা BSE ( Bombay Stock Exchange) ও NSE ( National Stock Exchange) এর অধীনে লিস্টেড হয়। ভারতের প্রায় ৫০০০ এর অধিক কোম্পানি শেয়ার মার্কেট এ লিস্টেড আছে। এর মধ্যে NSE এর অধীনে ২১১৩ টি কোম্পানি এবং BSE এর অধীনে ৫০০০ এর বেশি কোম্পানি লিস্টেড আছে।  Telegram Channel  Join Now শেয়া