শেয়ার কেনার সঠিক সময় কোনটি? এই বিষয়টিকে আপনি যদি সঠিকভাবে বুঝতে পারেন তাহলে শেয়ার মার্কেট থেকে বিনিয়োগ করে বড় বড় প্রফিট করতে পারবেন।
শেয়ার মার্কেটে ( Share Market) অনেকেই কোম্পানির শেয়ার এনালিসিস করার পরেও শেয়ার কেনার সঠিক সময় বুঝতে না পেরে, ভুল দামে এন্ট্রি নিয়ে থাকেন। আর এ কারণেই তারা অন্যদের থেকে বেশি প্রফিট করতে পারেন না। আপনি যদি শেয়ার মার্কেট থেকে সব সময় এ লাভবান হতে চান , তাহলে আপনাকে সঠিক দাম এ এন্ট্রি নিতে হবে।
শেয়ার কেনার সঠিক সময়: কিভাবে সঠিক সময়টি বুজবেন?
সব সময় মাথায় রাখবেন আপনি কোন কোম্পানির ১০ টাকার ভ্যালুয়েশনের শেয়ারকে যদি ৭ টাকায় কিনতে পারেন তাহলে, অনেক বেশি প্রফিট করবেন অন্যদের থেকে অর্থাৎ আপনাকে সব সময় নিচু লেভেলে বিনিয়োগ করতে হবে। তাই এই নিবন্ধে শেয়ার কেনার সঠিক সময় সম্পর্কে কিছু টিপস দেব যেগুলি একজন নতুন বিনিয়োগকারীর জন্য খুবই উপযোগী।
শেয়ার কেনার সঠিক সময়- বিনিয়োগ ও ট্রেডিং
কোনো কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগের ( Investing) আগে আপনাকে ঠিক করে নিতে হবে, কোন উদ্দেশ্যে আপনি শেয়ারটি কিনছেন অর্থাৎ আপনি এই শেয়ারে বিনিয়োগ করতে চান না অল্প সময়ের জন্য ট্রেডিং করতে চান। কারণ এই দুটি বিষয়ে সম্পূর্ণ আলাদা এবং দুটি ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা রকম স্ট্রাটেজি তৈরি করা হয় এন্ট্রি নেওয়ার জন্য।
বিনিয়োগের ক্ষেত্রে শেয়ার কেনার সঠিক সময়
- আপনি যে কোম্পানিতে বিনিয়োগ ( Invest) করতে চান সেই কোম্পানি যেন আন্ডার ভ্যালুড হয় ও ফান্ডামেন্টালি ভালো হয়। কখনো ওভার ভ্যালুড কোম্পানিতে বিনিয়োগ করবেন না।
- শেয়ার এর দাম অল টাইম হাই থেকে মিনিমাম ৫ থেকে ১০% ডিসকাউন্টে থাকে। যত নিচে হবে তত ভালো।
- ফান্ডামেন্টালি ভালো কোন কোম্পানির শেয়ার যত নিচু লেভেলে কিনতে পারবেন তত ভালো।
- শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করার সবথেকে সঠিক সময় হল মার্কেটে যখন নেগেটিভ সেন্টিমেন্ট চলে। কারণ নেগেটিভ সেন্টিমেন্ট এর কারণে ভালো ভালো কোম্পানির শেয়ার প্রাইজ নিচু লেভেলে চলে আসে।
- কোন নেগেটিভ নিউজ এর কারণে মার্কেট যখন ডাউনে চলে আসে অথবা মার্কেট এ যখন কারেকশন হয় তখন অল্প অল্প করে বিনিয়োগ করার সঠিক সময়।
- কোন ভাল কোম্পানির শেয়ার যদি একটি কোয়ার্টারে খারাপ রেজাল্টের কারণে ৫-৭% ডিসকাউন্ট আসে তাহলেও এটাকে একটি অপরচুনিটি হিসেবে নিতে হবে।
- বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এন্ট্রি নেওয়ার জন্য আপনি EMA ইন্ডিকেটর ব্যাবহার করতে পারেন। কোন ভাল কোম্পানির শেয়ারের দাম 200 EMA এর কাছে থাকলে, সেই শেয়ার কেনার একদম সঠিক সময়। এছাড়াও আপনি যদি ভালো কোন কোম্পানির শেয়ারের দাম 50EMA ও 100 EMA এর কাছে পেয়ে যান, তাহলে সেটিও শেয়ার কেনার উপযুক্ত সময়।
মার্কেট ডাউন হতে থাকলে, ভয় পাবেন না। কারণ মার্কেট ডাউন এ এলে, বিনিয়োগ কারি দের খুশির সময়। এই সময় ইনভেস্টমেন্ট করতে থাকবেন অবশ্যই ভালো কোম্পানির শেয়ারে।
আরও পড়ুন:
ক্লিক করুন - শেয়ার মার্কেট কি? কিভাবে শুরু করবো ?
ক্লিক করুন - শেয়ার কেনার কত দিন পর বিক্রি করা যায় : কখন বিক্রি করা উচিত ?
ক্লিক করুন - শেয়ার বাজারে সর্বনিম্ন কত টাকা বিনিয়োগ করা যায় ?
ক্লিক করুন - ভালো শেয়ার চেনার উপায় : ১৪ টি কার্যকরী টিপস
ক্লিক করুন - ব্যাংকিং স্টকস এনালিসিস করার পদ্ধতি: একটি সম্পূর্ন গাইড
ট্রেডিং এর ক্ষেত্রে শেয়ার কেনার সঠিক সময়
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা একটা জিনিস হল ট্রেডিং। ট্রেডিং হলো খুব অল্প সময়ের জন্য শেয়ার কেনাবেচা করা। মার্কেটের যে ছোট ছোট আপ-ডাউন হতে থাকে , তখন শেয়ার কেনাবেচার মাধ্যমে প্রফিট বা লস বুক করা হলো ট্রেডিং। ট্রেডিং হল টেকনিক্যাল এনালাইসিস নির্ভর।তাই ট্রেডিং এর ক্ষেত্রে শেয়ার কেনার সময় নিচের বিষয়গুলি মনে রাখবেন -
Swing ট্রেডিং এর ক্ষেত্রে শেয়ার কেনার সময়
- সাপোর্ট রেজিস্ট্যান্ট স্ট্রাটেজি ( Support - Resistance Strategy): সুইং ট্রেডিং এর ক্ষেত্রে সাপোর্ট লেভেলে শেয়ার কেনা যায় এবং রেজিস্ট্যান্স এর কাছে সেটিকে সেল করা যেতে পারে।
- 50 EMA ব্রেক আউট রিটেস্ট স্ট্রাটেজি ( 50 EMA Break Out & Retest Strategy): চার্ট ওপেন করে আপনি 50 EMA সেট করবেন। এনালাইসিস করে দেখবেন যে বড় সবুজ ক্যান্ডেলে 50 EMA ব্রেক আউট হয়েছে এবং তারপর রিটেস্ট ক্যান্ডেল তৈরি করেছে। হঠাৎ শেয়ারের দাম একটু ডাউনে এসে 50 EMA এর কাছাকাছি একটি ক্যান্ডেল তৈরি করেছে। যদি সেই রিটেস্ট ক্যান্ডেলের হাই ব্রেক হয় তাহলে আপনি এন্ট্রি নিতে পারেন। এবং 50 EMA ব্রেক আউট ক্যান্ডেলের Low হবে স্টপ লস।
- ব্রেক আউট স্ট্যাটেজি ( Break Out Strategy): এক্ষেত্রে কোন কোম্পানির শেয়ার যদি তার অল টাইম হাই অথবা অনেকদিনের রেজিস্ট্যান্স, অথবা কোন ট্রেন্ডলাইন অথবা, কোন চার্ট প্যাটার্ন কে ব্রেক আউট করে তাহলে আপনি অল্প টাকা দিয়ে এন্ট্রি নিতে পারেন। তারপর শেয়ারটি যদি ট্রেন্ড লাইনকে রিটেস্ট করে আবার উপরে উঠতে থাকে তাহলে আপনি আরো কিছু অ্যামাউন্ট বাড়াতে পারেন।
সুইং ট্রেডিং ( Swing Trading) এর ক্ষেত্রে চার্ট এ ১ দিনের ক্যান্ডেল ব্যবহার করবেন এবং অবশ্যই স্টপ লস ব্যবহার করবেন। নতুনদের শেয়ার মার্কেটে ট্রেডিং করা থেকে বিরত থাকতে বলবো। মার্কেটে এক থেকে দুই বছরের অভিজ্ঞতা না হলে এবং টেকনিক্যাল এনালাইসিস ভালোভাবে না জেনে কখনোই ট্রেডিং করবেন না।
ইন্ট্রাডে ট্রেডিং এর ক্ষেত্রে শেয়ার কেনার সময়
- ইন্ট্রাডে ট্রেডিং ( Intraday Trading) এর ক্ষেত্রে আপনি ৩ মিনিট অথবা ৫ মিনিটের ক্যান্ডেল ব্যবহার করতে হবে।
- এক্ষেত্রে একইভাবে শেয়ার এর চার্ট এ আপনাকে সাপোর্ট এবং রেজিস্টেন্স মার্ক করে নিতে হবে।
- ব্রেক আউট হলে আপনি শেয়ার বাই করতে পারেন এবং ব্রেক ডাউন হলে শর্ট সেলিং করতে পারেন।
- EMA অথবা RSI ইন্ডিকেটর এর সাহায্য নিতে পারেন।
ইন্ট্রাডে ট্রেডিং খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এখানে আপনার টাকা লস যেতে পারে। তাই সবাইকে অনুরোধ করবো, শেয়ার মার্কেটে ইন্ট্রাডে ট্রেডিং থেকে দূরে থাকুন।
উপসংহার
বন্ধুরা শেয়ার বাজার থেকে বড় প্রফিট করতে চাইলে শেয়ার কেনার সঠিক সময়টি নির্ধারণ করতে হবে। এই নিবন্ধে সেই বিষয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো। আপনি একজন যদি বিনিয়োগ কারী হন অথবা ট্রেডার হন, উপরের নিবন্ধটি মন দিয়ে পড়ুন তাহলে শেয়ার কেনার সঠিক সময় ও কৌশল বুঝে নিতে পারবেন।
Comments
Post a Comment