শেয়ার কেনার কৌশল গুলি আপনি জানতে পারলেই শেয়ার বাজার ( Share Bazar) থেকে সর্বাধিক প্রফিট আপনি তৈরি করতে পারবেন। এই নিবন্ধে আমি শেয়ার কেনার সেরা কৌশল গুলি নিয়ে আলোচনা করব যেগুলি আপনাকে লাভ করতে সাহায্য করবে।
শেয়ারবাজার ঝুঁকি কিন্তু একটা লাভজনক ব্যবসা। আপনি এখানে ভারতের বড় বড় কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে সেখান থেকে মোটা মুনাফা অর্জন করতে পারেন। কিন্তু তার আগে আপনাকে ভালো শেয়ার নির্বাচন এবং শেয়ার কেনার নিয়ম গুলো জানতে হবে। সঠিক সময়ে যদি আপনি শেয়ার Buy করতে পারেন তাহলে আপনার প্রফিট মার্জিন অনেক বেশি হবে।
শেয়ার কেনার কৌশল - সেরা কৌশল শিখুন
শেয়ার কেনার কৌশল শিখুন খুবই সহজ ভাষায়। শেয়ার বাজারে অনেকেই আছেন যারা শুধুমাত্র কখন শেয়ার কেনা উচিত সেটি না জানার জন্যই শেয়ার বাজার (Stock Market) থেকে বেশি প্রফিট লাভ করতে পারেন না।
শেয়ার কেনার লাভজনক কৌশল গুলি সম্পর্কে আলোচনা করার আগে আমি ধরে নিলাম, আপনি সঠিক ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস ( Fundamental Analysis) করে কোম্পানি নির্বাচন করেছেন। তাহলে প্রশ্ন হলো, এবার কখন সেই শেয়ার টি কিনবেন ?
শেয়ার কেনার কৌশল - সেরা কৌশল শিখুন
১. আপনি যদি একজন বিনিয়োগকারী হয়ে থাকেন তাহলে কখনোই ওভার ভ্যাল্যুড( Over Valued) কোম্পানি তে বিনিয়োগ করবেন না।
২. 52 Week High Price থেকে কোম্পানির শেয়ার প্রাইস টি যত নিচে পাবেন তত ভালো। কখনো হাই প্রাইজ এ এন্ট্রি নেবেন না। মনে রাখবেন, শেয়ার মার্কেট অনেক কোম্পানি আছে, আপনি সব সময় সুযোগ পাবেন।
৩. আপনি যদি ইনভেস্টর হন, তাহলে এন্ট্রি নেওয়ার জন্যে, EMA ও Weekly Candle ব্যাবহার করতে পারেন। Tradingview ওয়েবসাইট এ 50 EMA, 100 EMA, 200 EMA সেট করে নেবেন এবং Weekly Candle সিলেক্ট করবেন। সবথেকে ভালো হয়, আপনি যদি শেয়ার প্রাইস টি 200 EMA এর কাছে পান, তখন এন্ট্রি করতে পারেন। সেটা যদি না হয়, তাহলে 50 ও 100 EMA এর কাছে এন্ট্রি নেওয়া যেতে পারে।
৪. আপনার পোর্টফলিও কে ভালো করে ম্যানেজ ( Portfolio Manage) করুন। অর্থাৎ আপনার পোর্টফোলিওতে যদি 15 টি স্টক থাকে তাহলে মিনিমাম ৬ থেকে ৭ টি স্টক লার্জ ক্যাপ থেকে এবং বাকিগুলো মিডক্যাপ ও স্মল ক্যাপ থেকে Buy করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন:
ক্লিক করুন - শেয়ার মার্কেট কি? কিভাবে শুরু করবো ?
ক্লিক করুন - শেয়ার কেনার কত দিন পর বিক্রি করা যায় : কখন বিক্রি করা উচিত ?
ক্লিক করুন - শেয়ার বাজারে সর্বনিম্ন কত টাকা বিনিয়োগ করা যায় ?
ক্লিক করুন - ভালো শেয়ার চেনার উপায় : ১৪ টি কার্যকরী টিপস
৫. যত ভালোই কোম্পানি হোক না কেন আপনি আপনার মোট ইনভেস্টেড ক্যাপিটাল ( Invested Capital) এর ৫% এর বেশি কোন কোম্পানিতে ইনভেস্ট করবেন না। যদি খুবই ভালো large ক্যাপ কোম্পানি হয় তাহলে আপনি ১০ শতাংশ অবধি যেতে পারেন। আর মিডক্যাপ ও স্মল ক্যাপ কোম্পানি হলে আপনি ৩% এর বেশি ইনভেস্ট করবেন না। ধরুন আপনার কাছে, ১ লাখ টাকা আছে। এর মধ্যে থেকে কোনো লার্জ ক্যাপ কোম্পানি তে ৫০০০-১০০০০ এর বেশি টাকা বিনিয়োগ করবেন না। এবং স্মল ক্যাম্প ও মিডক্যাপ কোম্পানি হলে ৩০০০-৩৫০০ এর বেশি টাকা ইনভেস্ট করবেন না কোনো একটি কোম্পানি তে। এর কারণ হলো আপনার পোর্টফোলিওর দু-চারটে কোম্পানি যদি ভাল পারফরম্যান্স নাও করে তাহলে আপনার সমগ্র পোর্টফোলিয়তে কোন ইফেক্ট পড়বে না। আরেকটি বিষয় মনে রাখবেন কোন একটি পার্টিকুলার সেক্টরে ১৫% এর বেশি ইনভেস্ট না করাই ভালো।
এবার প্রশ্ন হল আপনার কাছে কম টাকা আছে, ১০০০০-৩০০০০ টাকা, তখন কি করবেন ?
এক্ষেত্রে উপরের মেথড এপ্লাই না করা ভালো। তবে এই ৩০ হাজার টাকা আপনি কোন একটি কোম্পানিতে চোখ বন্ধ করে বিনিয়োগ করবেন না। ৫-৬টি ভালো কোম্পানি বাছাই করুন এবং সঠিকভাবে সেখানে বিনিয়োগ করতে পারেন। সব সময় মনে রাখবেন মিডক্যাপ ও স্মল ক্যাপ কোম্পানি রিস্কি হয়ে থাকে এবং High রিটার্ন দেয় তাই এখানে আপনার বিনিয়োগ একটু কম করে রাখাই ভালো।
৬. এবার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি আলোচনা করব। আপনি যখন কোন কোম্পানির শেয়ার Buy করতে যাবেন তখন একেবারেই সব টাকা বিনিয়োগ করে দেবেন না। অল্প অল্প করে বিনিয়োগ করুন। ধরুন, কোনো কোম্পানির শেয়ার এখন চলছে ১০০ টাকা। আপনি ফান্ডামেন্টাল অ্যানালিসিস ও সমস্ত কিছু ঠিক করে দেখলেন যে এখন এই কোম্পানিতে এন্ট্রি নেওয়া যেতে পারে। তারপর আপনি ঠিক করলেন এই কোম্পানিতে আমি মোট ১০ হাজার টাকা ইনভেস্ট করব। তাহলে আপনি একেবারেই কি ১০ হাজার টাকা শেয়ার কিনে নেবেন ? না, এটি কখনোই করবেন না।
আপনি যত টাকা ইনভেস্ট করবেন ওই কোম্পানির শেয়ারে, সেটা কে ৩ ভাগে, ভাগ করে নিতে পারেন। অর্থাৎ আপনি প্রথমে ৪০০০ টাকা ইনভেস্ট করলেন। তারপর যদি আরও ৫-১০% ডাউন এ আসে কোম্পানি টি, আবার ৩ হাজার টাকা ইনভেস্ট করলেন। তারপর আবার যদি ডাউন এ আসে ত বাকি ৩০০০ টাকা ইনভেস্ট করলেন। তাহলে আপনার Avarage Buying Price কমে আসবে, এবং আপনি বেশি প্রফিট তৈরি করতে পারবেন।
সহজ একটা উদাহরণ দিয়ে বোঝাই, কোনো শেয়ার এর মূল্য চলছে ১০০ টাকা। তখন আপনি অল্প শেয়ার কিনলেন। যদি শেয়ার এর প্রাইস ডাউন হতে হতে ৫০ টাকায় আসে, তখন আপনি আরো বেশি শেয়ার কিনলেন। এক্ষেত্রে আপনার buying Average Price এসে দাঁড়াবে প্রায় ৭০-৭৫ টাকায়। তাহলে স্টক যখন আবার ১০০ টাকায় পৌঁছাবে, তখন আপনি ২৫-৩০% প্রফিট এ থাকবেন। কিন্তু আপনি যদি শেয়ার প্রাইস যখন ১০০ ছিল তখন সব টাকা ইনভেস্ট করে দিতেন, তাহলে শেয়ার প্রাইস আবার যখন ১০০ টাকা তে আসতো, তখন প্রফিট এ থাকতেন না।
শেয়ারবাজারে আপনি লং টার্মের জন্য সব সময় প্রফিটেবল থাকতে চান তাহলে উপরের এই শেয়ার কেনার কৌশল গুলি খুব ভালো করে মনে রাখবেন। আরো একটি কথা মনে রাখবেন সব সময় আপনার পোর্টফলিও সমস্ত স্টক কখনো একসাথে পারফরমেন্স করবে না। শেয়ার মার্কেট থেকে ভালো লাভবান হওয়ার একমাত্র উপায় হল ধৈর্য এবং সময় দেওয়া।
শেয়ার বাজার সংক্রান্ত আপডেট বাংলায় পেতে টেলিগ্রামে যুক্ত হন - ক্লিক করুন
Happy Investing!
Comments
Post a Comment