লার্জ ক্যাপ, মিডক্যাপ স্মল ও ক্যাপ কোম্পানি বলতে কি বোঝায়, সেই বিষয়ে এই নিবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
লার্জ ক্যাপ, মিড ক্যাপ, স্মল ক্যাপ কোম্পানি কি ( Large Cap, Mid Cap & Small Cap)
অনেকেই যারা নতুন শেয়ার মার্কেটে ( Share Market) এসেছেন তাদের মনে একটা প্রশ্ন জাগে যে কোন কোম্পানিগুলোকে লার্জ ক্যাপ ( Large Cap) , মিড ক্যাপ ( Mid Cap) ও স্মল ক্যাপ ( Small Cap) কোম্পানি কোন গুলো? শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার সময় বিভিন্ন কোম্পানির যে মার্কেট ক্যাপাসিটি হিসেবে যে পার্থক্য আছে, সেটি জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এবং সেই সাথে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে যে কোন মার্কেট ক্যাপাসিটি কোম্পানিতে রিস্ক কেমন এবং তার প্রফিট কেমন হবে।
লার্জ ক্যাপ, মিড ক্যাপ, স্মল ক্যাপ কোম্পানি কি
ভারতীয় শেয়ার বাজারে প্রায় ৬ হাজারের উপরে কোম্পানি লিস্টেড আছে। কোম্পানির মার্কেট ক্যাপাসিটি হিসেবে অর্থাৎ কোন কোম্পানি কত বড় মূলধন আছে, সেই হিসেবে সমস্ত কোম্পানিগুলিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয় । যথা - লার্জ ক্যাপ, মিড ক্যাপ ও স্মল ক্যাপ।
স্মল ক্যাপ কোম্পানি: সাধারণত যে সমস্ত কোম্পানির মার্কেট ক্যাপাসিটি অর্থাৎ কোম্পানির বাজার মূলধন ৫ হাজার কোটি টাকার নিচে সেই সমস্ত কোম্পানি গুলিকে স্মল ক্যাপ কোম্পানি বলা হয়ে থাকে। এই সমস্ত কোম্পানিগুলো আকারে অনেকটি ছোট হয়ে থাকে। এবং কোম্পানিগুলো নতুন ও উচ্চ রিটার্ন সম্পন্ন হয়ে থাকে। কিন্তু মনে রাখতে হবে এই ধরনের কোম্পানিতে রিস্ক অনেকটা বেশি থাকে।
এখানে আরেকটি বিষয় মনে রাখবেন -
- মাইক্রো ক্যাপ কোম্পানি: এ স্মল ক্যাপ ক্যাটাগরির মধ্যে যে সমস্ত কোম্পানির মার্কেট ক্যাপাসিটি ২০০ কোটি টাকার নিচে তাদের কে মাইক্রো ক্যাপ কোম্পানি বলা হয়ে থাকে। এই কোম্পানিগুলি খুবই নতুন এবং হাই রিস্ক হয়ে থাকে।
মিড ক্যাপ কোম্পানি : যে সমস্ত কোম্পানির মার্কেট ক্যাপাসিটি অর্থাৎ কোম্পানির বাজার মূলধন পাঁচ হাজার কোটি টাকা থেকে ২০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে হয় সেই সমস্ত কোম্পানিগুলোকে মিড ক্যাপ কোম্পানি বলা হয়। এই সমস্ত কোম্পানিগুলি লার্জ ক্যাপ কোম্পানি থেকে বেশি রিটার্ন দিয়ে থাকে কিন্তু রিস্ক ও অনেক বেশি থাকে।
লার্জ ক্যাপ কোম্পানি: ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি মার্কেট ক্যাপাসিটি যুক্ত কোম্পানিকে লর্ডস ক্যাপ কোম্পানি বলা হয়ে থাকে। এইসব কোম্পানিগুলি সাধারণত সেক্টর এর মার্কেট লিডার হয়ে থাকে। এবং এই সমস্ত কোম্পানিগুলি যেহেতু অনেক বড় এবং প্রতিষ্ঠিত তাই এখানে রিটার্ন কম থাকলেও রিস্ক অনেকটাই কম থাকে।
আরও পড়ুন:
ক্লিক করুন - শেয়ার মার্কেট কি? কিভাবে শুরু করবো ?
ক্লিক করুন - শেয়ার কেনার কত দিন পর বিক্রি করা যায় : কখন বিক্রি করা উচিত ?
ক্লিক করুন - শেয়ার বাজারে সর্বনিম্ন কত টাকা বিনিয়োগ করা যায় ?
ক্লিক করুন - শেয়ার বাজারে ক্ষতি এড়ানোর উপায় : ১০ বিষয় আপনার জানা দরকার
লার্জ ক্যাপ, মিড ক্যাপ এবং স্মল ক্যাপ কোম্পানির মধ্যে পার্থক্য
বৈশিষ্ট্য
|
লার্জ ক্যাপ কোম্পানি
|
মিড ক্যাপ কোম্পানি
|
স্মল ক্যাপ কোম্পানি
|
বাজার মূলধন
|
২০,০০০ কোটি টাকার বেশি
| ৫০০০ কোটি টাকা থেকে ২০,০০০ কোটি টাকার মধ্যে
|
৫০০০ কোটি টাকার কম
|
বৃদ্ধির সম্ভাবনা
|
কম
|
মাঝারি
|
বেশি
|
ঝুঁকি
|
কম
|
মাঝারি
|
বেশি
|
লভ্যাংশ
|
নিয়মিত
|
মাঝে মাঝে
|
অনিয়মিত
|
কোন ধরনের কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা ভালো?
আপনার ক্যাপিটাল, বিনিয়োগের লক্ষ্য ও ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা হিসেবে আপনার বিনিয়োগ পরিকল্পনা তৈরি করা উচিত।
- যদি আপনি কম রিস্ক নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীল লাভজনক রিটার্ন চান, তাহলে আপনার large cap কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা ভালো।
- যদি আপনি ঝুঁকি নিতে পছন্দ করেন এবং উচ্চ রিটার্ন চান তাহলে মিড ক্যাপ ও স্মল ক্যাপ কোম্পানি তে বিনিয়োগ করতে পারেন।
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার আগে করনীয়
- কোম্পানির ব্যবসায়িক দিক, আর্থিক অবস্থা ( Balance Sheet) ইত্যাদি বিষয়গুলিকে ভালো করে এনালাইসিস করুন।
- কোম্পানির ব্যবসায়িক মডেল ও তার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ভালো করে জানুন।
- দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ পরিকল্পনা তৈরি করুন।
- পোর্টফোলিওতে সব ক্যাটাগরি এর কোম্পানি কে রাখার চেষ্টা করুন।
- রিস্ক ম্যানেজমেন্ট করা শিখতে হবে।
- আবেগ দ্বারা কখনো বিনিয়োগ করবেন না।
উপসংহার
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ একটি লাভজনক ব্যবসা কিন্তু এখানে রিস্ক ও আছে। তাই বিনিয়োগ করার আগে আপনাকে জানতে হবে এবং শিখতে হবে। নিজে একবার কোম্পানির ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস করা শিখে গেলে তাহলে আপনার এই কোম্পানি সম্পর্কে কনফিডেন্স তৈরি হবে। এবং আপনি একজন ভালো ইনভেস্টর হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন।
Comments
Post a Comment